চকলেট পছন্দ করেনা এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া খুব কষ্টকর। ছোট থেকে বড় সবাইের পছন্দের একটি প্রথম সারির খাবার। চকোলেট কোকো গাছের বীজ থেকে তৈরি। এতে পলিফেনল রয়েছে, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এলডিএল কোলেস্টেরল (খারাপ ধরনের) হ্রাস করে এবং রক্তচাপ হ্রাস করে। চকোলেট হার্ট ভালো রাখতে সাহায্য করে। এটি হৃদস্পন্দন ভালো রাখে, আর হৃদপিণ্ডকেও স্বাস্থ্যকর রাখে। অনেকেই ভাবেন চকোলেট স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক। কিন্তু আসলে তা না। বাজারে দু’ধরনের চকলেট পাওয়া যায়। ডার্ক চকলেট এবং মিল্ক চকলেট। ডার্ক চকলেট স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী।
চলুন জেনে নেওয়া যাক ডার্ক চকলেট স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী-
হার্ট ভালো রাখে: ডার্ক চকলেটের প্রধান উপাধান হল কোকো। যারা নিয়মিত পরিমাণে ডার্ক চকলেট খায় তাদের হার্টের রোগ হওয়ার ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় কম থাকে। ডার্ক চকলেট রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে এবং হার্ট সুস্থ রাখে। এর পাশাপাশি চকলেটে থাকা ফ্লেভোনয়েড নামক এন্টি অক্সিডেন্ট স্ট্রোকের বিরুদ্ধে লড়াই করে স্ট্রোকের ঝুঁকি মুক্ত করে।
আরও পড়ুন- দুপুরে ঘুমের অভ্যাস আছে! অজান্তেই ডেকে আনছেন নানা রোগ
স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়: ডার্ক চকলেট উচ্চ রক্তচাপ স্বাভাবিক করে এবং হৃদযন্ত্রের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমায়। এ ছাড়া চকলেট রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে এবং মানসিক চাপ কমায়। চকলেটে থাকা ফ্লেভোনয়েড নামক এন্টি অক্সিডেন্ট স্ট্রোকের বিরুদ্ধে লড়াই করে ২০ শতাংশ পর্যন্ত ঝুঁকি কমিয়ে আনে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে: কোকোয়া রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ কমিয়ে আনে এবং ইনসুলিন লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখে। ভালোবাসায় চিনি একটু বেশিই থাকে। কিন্তু রক্তে চিনির পরিমাণ বাড়তে দেওয়া চলবে না। তাই চকলেট গ্রহনের ফলে গ্লুকোজের পরিমাণ কমিয়ে আনে এবং ইনসুলিন লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখে। এর ফলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে।
ত্বক সুন্দর রাখে: ত্বককে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে রক্ষা করে ডার্ক চকলেট। তাছাড়া ডার্ক চকলেটকে গলিয়ে তা ত্বকে রূপচর্চার কাজেও ব্যবহার করা যায়।
মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা: ডার্ক চকোলেটে থাকে ফ্ল্যাভোনলস। যা মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ করে। সেই সঙ্গে মনে রাখার ক্ষমতাও বাড়ে। ডার্ক চকলেট মস্তিস্কে রক্তচলাচলে সহায়তা করে। এর ফলে আপনার মস্তিস্কের কার্যাবলী অত্যন্ত সঠিক ও সুন্দরভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়।
গর্ভাবস্থায় চকলেট: মানসিক চাপ হল সব রোগের উরধে। আর যদি মহিলারা গর্ভাবস্থায় মানসিক চাপে থাকেন তাহলে সেটা আরো মারাত্মক। গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে সব মহিলারা গর্ভাবস্থায় বেশি চকোলেট খান তাঁরা স্ট্রেসমুক্ত থাকেন।
কোলেস্টেরল কমায়: আমাদের শরীরে ২ ধরনের কোলেস্টেরল থাকে। ভালো কোলেস্টেরল এবং খারাপ কোলেস্টেরল। ডার্ক চকলেটের তেতো স্বাদ আমাদের শরীর থেকে খারাপ কোলেস্টেরল দূর করে ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়ায়।
ক্যান্সার প্রতিরোধে: ডার্ক চকলেটে থাকা ক্যাটেকিনস নামের একটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পদার্থ ক্যানসার প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। এই অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীর থেকে টক্সিন বের হয়ে যেতে সহায়তা করে যা ক্যান্সার সেল জন্ম নেওয়ার আশংকা অনেকাংশে কমিয়ে দেয়।
চকলেটের উপকারিতা আছে এটা সত্যি। কিন্তু তাই বলে চকলেটের প্রতি আসক্ত হয়ে যাবেন না যেন! কারন এর কিছু মন্দ দিকও আছে। নিয়মিত কিন্তু অল্প পরিমানে চকলেট খান। তবে চিনি বিহীন বা অল্প চিনির ডার্ক চকলেট খান। সুস্থ থাকুন।