বাঙালিদের কর্মব্যস্ত জীবনে দুপুরে খাওয়ার পর একটু ভাতঘুম না দিলে যেন চলে না। শীত হোক বা গ্রীষ্ম, দুপুরে একটু গড়িয়ে নেওয়ার লোভ সামলাতে পারেন কজন। তবে এই ঘুম শরীরের জন্য কতটা উপকারী বা ক্ষতিকর- সেটা জানা জরুরি। কারণ কোনো ভুল অভ্যাস শরীরের ক্ষতি করতে পারে। এই দুপুরের ঘুমই আপনার জীবনে ডেকে আনে নানা ধরনের রোগ। এই দুপুরের ঘুম আপনার হজমশক্তির, মস্তিষ্ক এবং হার্টের উপর প্রভাব ফেলে। তাই সুস্থ জীবনযাপনে অবিলম্বে দুপুরে ঘুমনোর অভ্যাস বাদ দিতে হবে।
চিকিৎসকদের মতে, একজন সুস্থ ব্যক্তির দৈনিক ৭-৮ ঘন্টা ঘুমের প্রয়োজন। কিন্তু সেটা মোটেও দিনের বেলা নয়, বরং রাতে। কারণ রাতের বেলাতেই আমাদের দৈহিক পরিশ্রম কম হয়। তাই তখন শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া একটু শিথিল থাকে। সেই সময় মস্তিষ্ক, হার্ট সবকিছুই শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া থেকে বিরত থাকে। পরের দিনের কাজের শক্তি সঞ্চয় করে আমাদের শরীর। তাই রাতের সঠিক ঘুম শরীরের পক্ষে খুবই জরুরি। কিন্তু দিনের বেলা তা মোটেই নয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দিনের বেলা বিশেষ করে দুপুরে ঘুমানো বিপজ্জনক। কারন দিনের বেলা দৈহিক পরিশ্রম বেশি হয়। তাই সেই সময় শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়াও খুব দ্রুত হয়। এই সময় ঘুম হিতে বিপরীত করে। তাই সেইসময় পরিপাকতন্ত্রকেও খুব কঠিন পরিশ্রম করতে হয়। কিন্তু এই পরিপাকতন্ত্র তখনই ঠিকঠাক কাজ করবে যখন আপনি জেগে থাকবেন।
কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুপুরে ঘুমোলে দেহের পরিপাকতন্ত্রের কাজ বেড়ে যায় বলে পেটের মধ্যে অ্যাসিডের মাত্রাও বেড়ে যায়। দুপুরে ঘুমিয়ে পড়লে পাকস্থলী ঠিকমতো নড়াচড়া করতে পারে না। ফলে খাবার হজম হয় না। ঠিক তখনই বুকজ্বালা, গ্যাসের মতো হজমের সমস্যা দেখা দেয়। এই হজমের সমস্যা থেকেই প্রভাব পড়ে হার্টের উপর। তাই খাওয়া শেষে না শুয়ে কিছুক্ষণ হাঁটা কিংবা বসে থাকা উচিত।
এছাড়া দুপুরে ঘুমোলে শরীরে মেদ জমে। তাই তাঁর প্রভাব ফেলে আমাদের হার্টের উপর। তাই মোটাদের মধ্যেই হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা বেশি থাকে। দুপুরে ঘুমোলে মস্তিষ্কের কাজেও বাধার সৃষ্টি হয়। ফলে মস্তিষ্ক দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। স্মৃতিশক্তি কমতে পারে। তাই আজ থেকে আমরা দুপুরের ঘুম থেকে বিরত থাকবো।