আল্লাহ তায়ালা সৃষ্ট সকল জীবের মধ্যে মানুষ শ্রেষ্ঠ। বাকি সমস্ত সৃষ্টিকে মানুষের প্রয়োজনে সৃষ্টি করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা প্রাণিজগৎকে পৃথক জাতি হিসেবে উল্লেখ করে পবিত্র কোরআনে বলেছেন, “পৃথিবীতে বিচরণশীল যত প্রাণী আছে আর যত পাখি দুই ডানা মেলে উড়ে বেড়ায়, তারা সবাই তোমাদের মতো একেক রকম জাতি।” (সূরা আনআম : ৩৮। বর্তমান সমাজে জীবজন্তুর মধ্যে কুকুরের প্রতি মানুষের আগ্রহ একটু বেশিই দেখা যায়। কুকুরকে খুব সহজেই পোষ মানানো যায়, তাই আমরা কুকুরকেই বেশি পোষ মানিয়ে থাকি। মানুষের জীবনে কুকুরের কি কি ব্যবহার আর মানুষের কুকুরকে ব্যবহারের কি কি বাধ্য বাধকতা আছে?
আসুন জেনে নিই সেই কুকুর সম্পর্কে ইসলামি দিক নির্দেশনা
কুকুরের মাংস খাওয়া প্রসঙ্গ:- ইসলামিক দৃষ্টিতে কুকুরের মাংস খাওয়া হারাম। আল্লাহ তায়ালা কোরান পাকে এরশাদ করেছেন, “তাদের জন্য পবিত্র জিনিস হালাল করা হয়েছে আর নিকৃষ্ট জিনিস করা হয়েছে হারাম।” (সূরা আরাফ: আয়াত-১৫৭)।
কুকুর লালনপালন প্রসঙ্গ:- কুকুরকে শিকারের উদ্দেশ্যে, পাহারাদার হিসাবে, ছাগল-ভেড়া ইত্যাদি হেফাজতের লক্ষ্যে, বাড়িঘর, দোকান ও অফিস পাহারার জন্য, অপরাধীদের চিহ্নিত করার জন্য পোষ মানানো বৈধ। (ফতোয়াতে মাহমুদিয়া: ১৮/২৬৪)।
পাক-নাপাকির বিধান:- হানাফি মাজহাব মতে কুকুরের শরীর নাপাক নয়। তাই কুকুর কারও শরীর বা কাপড় স্পর্শ করলে তা নাপাক হবে না। কিন্তূ কুকুরের লালা নাপাক। কুকুরের লালা যেহেতু নাপাক তাই কারও কাপড় ধরে টানলে তা নাপাক হয়ে যায়।(বাহরুর রায়েক: ১/১০১)।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি শিকার করা বা গবাদিপশু পাহারা অথবা শস্যক্ষেত পাহারা দেওয়ার দেওয়ার উদ্দেশ্য ছাড়া কুকুর লালন-পালন করে, প্রতিদিন ওই ব্যক্তির দুই কিরাত পরিমাণ নেকি হ্রাস পায়।’(মুসলিম শরিফ: হাদিস-১৫৭৫, তিরমিজি শরিফ: হাদিস-১৪৮৭)
অন্য এক হাদিসে আছে, ‘এক কিরাত হলো, উহুদ পাহাড়ের সমপরিমাণ।” (মুসনাদে আহমদ বিন হাম্বাল: হাদিস-৪৬৫০) অন্যত্র বলা হয়েছে যে, ঘরে কুকুর রেখে লালন-পালন করা ইসলাম কঠোরভাবে নিষেধ করেছে। কেননা, কেবল শখ করে ঘরে কুকুর রাখা ইসলামি শরিয়ত সম্মত নয়। আর এ জন্যই হাদিস শরীফে এসেছে, ‘যে ঘরে কুকুর আছে, সে ঘরে রহমতের ফেরেশতারা প্রবেশ করেন না।’(সহিহ বোখারি শরিফ: ৫৫২৫)।