মশা একটি যন্ত্রণাদায়ক পতঙ্গের নাম। মশা আকারে অতি ক্ষুদ্র হলেও কর্ম দক্ষতায় খুবই এক্সপার্ট। মশার গুনগুন শুধু বিরক্তিকর নয়, ক্ষতিকারক এই পতঙ্গ বিভিন্ন রোগ জীবানু বহন করে। এই পতঙ্গটির যন্ত্রণায় রাতের ঘুম হারাম হয় অনেকের। প্রতিদিন কয়েল, স্প্রে ইত্যাদি ব্যবহার করার ফলে মশা যেন কিছুতেই যাইনা। যার ফলে আমরা অনেকেই অস্বস্তিতে পরে থাকি মশার এই উপদ্রবে। মশার হাত থেকে মুক্তি পেতে আমরা অনেক উপায় বের করে থাকি। কিন্তু এসব আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক। তাই জেনে নেওয়া যাক এমন কিছু ঘরোয়া উপায়, যার সাহায্যে খুব কম সময়ে মশা তাড়াতে সক্ষম হবেন।
লেবু ও লবঙ্গ:- লেবু দু’ভাগ করে তার মধ্যে অনেকগুলো লবঙ্গ গেঁথে দিন। লবঙ্গের মাথার দিকটা যেন বাইরে বেরিয়ে থাকে। আর এগুলি ঘরের কোনায় রেখে দিন। এতে করে ঘরের মশা একেবারেই দূর হয়ে যাবে।
রসুন:- রসুনের তীব্র ঝাঁঝালো গন্ধ মশার হাত থেকে মুক্তি পেতে দারুন কার্যকারী। তাই কয়েক কোয়া রসুন তেথলে পানিতে সেদ্ধ করুন। এই মিশ্রণটিকে ঠাণ্ডা করে স্প্রে বোতলে ভরে ঘরের কোনায়, দরজা, জানলায় চারিদিকে স্প্রে করুন। মশা তাড়ানোর এটি একটি প্রাকৃতিক উপায়। এতে করে মশার যন্ত্রণা থেকে রেহাই পাওয়া সম্ভব।
নারিকেলের আঁশ:- নারিকেলের গায়ে থাকা আঁশের সাহায্যে দূর করতে পারেন মশা। নারিকেলের আঁশ ভালো করে রোদে শুকিয়ে টুকরো করে কেটে একটি কাঠের পাত্রে রেখে জলন্ত ম্যাচের কাঠি ধরুন। ৫-৬ মিনিটের মধ্যে সহজেই মশা দূর হবে।
নিম তেল:- মশা তাড়ানোর বিশেষ গুন আছে নিমের। নিম তেল ও নারকেল তেল সমপরিমাণ নিয়ে একসঙ্গে মিশিয়ে দরকার মত স্প্রে করেনিন শরীরের খোলা অংশে। এই মিশ্রন স্নানের পরে ব্যবহার করতে পারেন গোটা শরীরে। এর প্রাকৃতিক সুগন্ধ আপনাকে ঘিরে রাখবে সারাদিন।
কর্পূর:- কর্পূরের গন্ধ মশা একদম সহ্য করতে পারে না। তাই ৪-৫টি কিউব জলের মধ্যে রেখে দিলে গোটা ঘরে গন্ধ হয়ে যায়। তা থেকে কমে যায় মশার উপদ্রব।
সিট্রোনিলা:- এক বিশেষ ধরনের ঘাসে এক্সাট্রাক্ট মশা তাড়াতে খুবই উপযোগী। বাজারে চলতি অনেক ধরনের মসকুইটো স্প্রেতে এই তেল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সরাসরি ঘরে স্প্রে করতে পারেন সিট্রোনিলা তেল।
চা পাতা:- ব্যবহৃত চা পাতা ফেলে না দিয়ে রোদে ভালো করে শুকিয়ে নিন। এইভাবে ওই চা পাতা ধুনোর বদলে ব্যবহার করুন। শুকনো চা পাতা পোড়ালে ধোঁয়ায় ঘরের সমস্ত মশা, মাছি, কীটপতঙ্গ পালিয়ে যাবে।
তুলসি:- ঘরের উঠানে তুলসি কেবল ধার্মিক কারনেই রাখা হয় না। আর নেপথ্যে রয়েছে অনেক উপকারের যুক্তি। তুলসির গন্ধ মশাদের একদম সহ্য হয় না। তাছাড়া এই গাছে রয়েছে নানান ঔষধি গুন।
কেরোসিন তেল স্প্রে:- কেরোসিন তেল স্প্রে বোতলে নিন। কয়েক টুকরো মেশান। ভালো করে ঝাঁকিয়ে স্প্রে করুন রুমে। এতে করে মশা থাকবে না।
ল্যাভেন্ডার:- ল্যাভেন্ডার-এর সুবাস খুব কার্যকরভাবে মশাদের দূরে রাখতে পারে। ল্যাভেন্ডারের ঘ্রান বেশ কড়া। এতে করে মশারা এই ঘ্রান সহ্য করতে পারে না। ল্যাভেন্ডারে অ্যানালজেসিক, অ্যান্টিফাঙ্গাল এবং এন্টিসেপটিক গুণ রয়েছে যা আমাদের জন্য খুবই স্বাস্থ্যকর। এটি মশার কামড় প্রতিরোধের পাশাপাশি এটি ত্বককে শান্ত এবং প্রশমিত করতে সাহায্য করে।
সুগন্ধি ব্যবহার:- মশা সুগন্ধি থেকে দূরে থাকে। তাই রাতে শোবার আগে সুগন্ধি কিংবা লোসন মাখতে পারেন। তা অনেকটাই মশার হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়।