হার্ট বা হৃদযন্ত্র এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যা আমাদের সুস্থ রাখতে দিবারাত্রি কাজ করে চলে। এই অঙ্গটি শরীরের ভেতরে থাকে বাইরে থেকে পর্যবেক্ষক করা যায় না বলে আমাদের হার্ট কি অবস্থায় আছে পরীক্ষা-নীরিক্ষা ছাড়া তা বোঝা অসম্ভব। তবে সচেতনতার মাধ্যমে এই রোগ থেকে দূরে থাকা সম্ভব। অনেকে মনে করেন স্বাস্থ্যকর খাবার খেলে আর নিয়মিত ব্যায়াম করলেই যথেষ্ট। কিন্তু এর বাইরেও আরও অনেক কিছু করা প্রয়োজন।
আপনার হার্ট একটি সূক্ষ্ম মেশিন। এটিকে স্বাভাবিকভাবে চালাতে চান? তবে আপনাকে হার্টের জন্য স্বাস্থ্যকর উপায় অবলম্বন করতে হবে। এর অর্থ আপনার একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য তালিকা নির্বাচন উচিত। আপনার হার্টের পক্ষে ভালো কোন খাবারগুলি তা জেনে নিন।
গাজর
আমাদের শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে গাজর। গাজরের মধ্যে থাকা এক প্রকার দ্রবনীয় আঁশ পাওয়া যায়। যা কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখে।
আমলকি
আমলকি হার্টকে ভালো রাখার মহা ঔষধ হিসাবে কাজ করে। এটি প্রায় সব ধরনের কার্ডিওভাসকুলার রোগ প্রতিরোধ করার এক অদ্ভুত ক্ষমতা রয়েছে আমলকির। যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
বেরি
বেরি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পলিফেনলে পূর্ণ, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে। বেরি ফাইবার, ফোলেট, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি-র দুর্দান্ত উৎস এবং এগুলিতে ফ্যাট কম থাকে।
আরও পড়ুন- ওষুধ ছাড়াই কোলেস্টেরল কমানোর সহজ উপায়
টক দই
চিনি ছাড়া দই অর্থাৎ টক দই হৃৎপিণ্ডের পাশাপাশি পুরো শরীরের জন্যেই অত্যন্ত উপকারী। করোনারি হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন যারা, তাদের জন্যে টক দই বিশেষভাবে উপকারী। টক দই আপনার পরিপাকতন্ত্রের সুস্থতা ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। সেই সঙ্গে এটি ত্বকের জন্যেও উপকারী। তাই প্রতিদিন এক কাপ টক দই খাবেন।
ওটমিল
ওটমিল আপনার পেট ঘন্টাখানেক ভরিয়ে দেয় এবং সময়ের সাথে সাথে রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল রাখতে সহায়তা করে। এটি ডায়াবেটিসযুক্ত ব্যক্তিদের জন্যও দরকারি। ওটসের ফাইবার খারাপ কোলেস্টেরল(এলডিএল) হ্রাস করে আপনার হার্টকে সহায়তা করে।
বাদাম
বাদাম, চিনাবাদাম, পেকান, পেস্তা এবং আখরোট হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এই বাদামগুলিতে প্রোটিন, ফাইবার, খনিজ, ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে।
আপনি কি জানেন?
প্রতি বছর কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজে (সিভিডি) বিশ্বব্যাপী ১৭ লাখ মানুষ মারা যান। বিশ্বজুড়ে মোট মৃত্যুর এক তৃতীয়াংশ মৃত্যু হয় এতেই। এই রোগে যারা মারা যান, তাঁদের মধ্যে এক তৃতীয়াংশ মধ্যবয়স্ক।
শিম
শিমে আছে সয়া প্রোটিন, যা রক্তের ট্রাইগ্লিসারাইড মাত্রাকে কমায়। আধাকাপ শিমে আছে নয় গ্রাম কোলেস্টেরল কমাবার উপযোগী আঁশ।
ব্রোকোলি
ব্রোকোলি থেকে পর্যাপ্ত ভিটামিন সি পাওয়া যায়। এতে থাকে প্রোটিনও। গবেষকদের দাবি, ব্রোকোলি কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ আটকাতে সাহায্য করে ও রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখে।
আপেল
হৃদরোগ কমাতে আপেল খুব উপকার করে। এর মধ্যে ভালো হজম হওয়ার মতো ফাইবার থাকে, যা কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। দিনে একটি করে আপেল হৃদরোগের সম্ভাবনা কমিয়ে দেয় ৪০ শতাংশ।
সামুদ্রিক মাছ
সামুদ্রিক মাছে আছে হার্টের জন্যে উপকারী ওমেগা-৩। রূপঁচাদা, কোরাল, রূপসা, লাক্ষা জাতীয় সামুদ্রিক মাছ খাওয়া যেতে পারে। এই ধরনের মাছ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। সপ্তাহে দুটি করে এই ধরনের মাছ খেলে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায় এক তৃতীয়াংশ।
হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখার কিছু উপায়
- রোজ শরীরচর্চা করুন
- ধূমপান ছেড়ে দিনে
- শরীরের মেদ কমিয়ে দিন, বিশেষ করে পেটের মেদ
- পরিমিত মদ্যপান করুন
- অতিরিক্ত খাবার খাবেন না
- অবসাদগ্রস্ত হবেন না