জিরার বৈজ্ঞানিক নাম কিউমিনাম কিউমিনাম লিন, জিরা ভারত, বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর সর্বএ জন্মে। তবে কাশ্মীরের জিরা সর্বোৎকৃষ্ট।
বৈজ্ঞানিক গবেষণায় মানব দেহের জন্য জিরার কতটুকু উপকারিতা ও অপকারিতা তা নিন্মে বিস্তারিত আলোচনা করা হলঃ
ওজন কমাতেঃ– জিরার পানি শরীরের চর্বি নিঃসরণে বিশেষ কার্যকরী ভূমিকা রাখে। এতে দেহের ওজন তাড়াতাড়ি হ্রাস পায়। দেহের ওজন সঠিক মাএায় ফিরে আসে। জিরার পানি দিনে দুবার খেলে এটি পেটের ক্ষুধা কমিয়ে দেয় যার ফলে খাওয়ার ইচ্ছেটা কমে যায়।
রোগ প্রতিরোধে ও বৃদ্ধিতেঃ- জিরাতে পর্যাপ্ত পরিমানে আয়রন বিদ্যমান। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং রোগ প্রতিরোধে বিশেষ কার্যকর। জিরাতে আয়রনের পাশাপাশি ভিটামিন এ ও সি আছে। যা দেহের জন্য অনেক উপকারি।
রক্তশূন্যতার চিকিৎসায়ঃ- জিরাতে আয়রন বিদ্যমান থাকায় হিমোগ্লোবিনের পরিমান বৃদ্ধিতে রক্তশূন্যতা দূর করে। এতে শারীরিক সমস্যা দূর হয়।
অ্যাসিডিটি নিরাময়েঃ- জিরার পানি অ্যাসিডিটির সমস্যা দূর করে। যে কোনও কঠিন খাবার বা দেরিতে হজম হয় এমন খাদ্য খাওয়ার পর জিরার পানি বা সামান্য জিরার চূর্ণ সেবন করলে অ্যাসিডিটির আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
কোষ্ঠকাঠিণ্য নিরাময়েঃ- জিরাপানি পানের আর একটি স্বাস্থ্যকর উপকারিতা হচ্ছে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। যাদের এই রোগ আছে তাদের দিনে দুইবার জিরাপানি সেবন করতে পারেন।
গ্যাষ্ট্রিক নিরাময়েঃ- বেশিরভাগ ভাগ মানুষ গ্যাষ্ট্রিকের সমস্যায় ভোগে থেকে কিছুতেই বাঁচতে পারি না। গ্যাষ্ট্রিক নিরাময়ের এক উত্তম ঔষধ হল জিরা পানি। তাই আমরা জিরা পানি পান করার অভ্যাস গড়ে তুলবো।
বমিভাব দূরীকরনেঃ- জিরাপানি বমি বমি ভাব দূরীকরনে করনে বিশেষ ভাবে কাজ করে। তাই গর্ভবতী মহিলারা গর্ভাবস্হায় জিরা পানি করতে পারেন।
দেহের পানিশূন্যতা দূরীকরণেঃ- জিরার পানি গরম কালে শরীরের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। জিরার পানি স্বাস্থ্যসম্মত প্রাকৃতিক ভাবে দেহের তাপমাত্রা কমায়।
অনিদ্রা দূরীকরনেঃ- জিরার পানি সেবন করলে ভাল ঘুম আনয়ন করে। যারা দীর্ঘদিন অনি্দ্রায় ভুগছেন তারা নিয়মিত কিছুদিন জিরার পানি পান করুন। এতে ভাল ঘুম হবে। জিরার পানি ঘুমের জন্য খুবই উপকারী ভেষজ ঔষধ।
স্মৃতিশক্তি উন্নত করেঃ- জিরার পানি স্মৃতিশক্তি বাড়ায় এবং মস্তিস্ক শক্তিশালি করতে বিশেষ ভাবে কাজ করে। নিয়মিত কিছুদিন জিরার পানি পান করলে উল্লেখযোগ্য ভাবে স্মৃতিশক্তি ও বুদ্ধিমত্তাকে বৃদ্ধি করে।
দেহের দূষিত পদার্থ দূরীকরণেঃ- জিরার পানি পান করলে যকৃতের ও পাকস্থলীর জন্য খুবই উপকারী এবং জিরায় বিদ্যমান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দেহের এবং ভেতরের অঙ্গের বিষাক্ততা দূর করে।
গর্ভবতী ও স্তন্যদায়ী মায়েদের বাড়তি পুষ্টিতেঃ- জিরার পানিতে পর্যাপ্ত পরিমান আয়রন বিদ্যমান থাকায় এটি গর্ভবতী ও স্তন্যদায়ী মায়েদের জন্য খুবই উপকারি ভেষজ উপাদান। তাই এটি গর্ভস্থ ভ্রুণের, বাচ্চার এবং মায়ের আয়রনের চাহিদা মেটাতে সাহায্য করে।
ত্বকের সুস্থতায়ঃ- জিরার পানি সেবনে ত্বক সুস্থ ও টানটান রাখে। জিরা পানি দেহকে আভ্যন্তরীণ ভাবে শক্তিশালী ও স্বাস্থ্যবান করে।
বার্ধ্যক রোধেঃ- জিরাতে পর্যাপ্ত পরিমানে ভিটামিন এ,সি,ই ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং এন্টিএজিং বিদ্যমান। তাই জিরার পানি পান করলে এটি অকাল বুড়িয়ে যাওয়া প্রতিরোধ করে।
ব্রণ নিরাময়েঃ- জিরা পানি ব্রণের জন্য প্রাকৃতিক ঔষধ হিসেবে কাজ করে। জিরার পানি পান করলে ব্রণ নিরাময় হয়।
জ্বালাপোড়া নিরাময়েঃ- জিরাপানি ত্বকের ও দেহের জ্বালাপোড়া ভাব দূর করতে সাহায্য করে।
জিরার পানি তৈরীর নিয়মঃ- ১ লিটার পানি ও দেড় চা চামচ জিরা নিন। চুলায় একটি হাঁড়িতে পানি ফুটিয়ে জিরা দিয়ে আরো ৮-১০ মিনিট ফুটিয়ে পানি পৌনে ১ লিটার হলে নামিয়ে ছেঁকে ঠাণ্ডা করতে হবে। এটি চাইলে কুসুম গরম বা বরফ শীতল দুইভাবেই খাওয়া যায়। আরো সুস্বাদু করার জন্য এর সাথে সামান্য চিনি, বিট লবন, গোলমরিচ গুঁড়ো, লেবুর রস, ধনেপাতা/পুদিনাপাতা কুচি যোগ করতে পারেন।